ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা: ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসায় সফল হওয়ার ৮ টি উপায়!



ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা



ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা


বর্তমান সময়ে নিজের একটি ব্যবসার দার করানোর অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা।ফেসবুকে এখন অনেকেই অনেক রকম ব্যবসা করতেছে। অনেকেই টি শার্ট বিক্রি করতেছে অনেকে  ঘড়ি বিক্রি করতেছে। আবার কেউ নিজেদের বানানো খাওয়া-দাওয়া বিক্রি করছে। এবং এই জিনিসটা এখন এত  বেশি জনপ্রিয় যেটা কল্পনা করা যায় না। তার কারণ হলো যারা এই ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসাগুলো করতেছে তারা এই ব্যবসাটা করে যা শিখবে সেটা অনেক সময় বিবিএ-এমবিএ করেও শেখা যায় না!


এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের সাথে আমি এমন কিছু টিপস শেয়ার করতে যাচ্ছি যেগুলোর অনুসরণ করলে আপনারা আপনাদের ফেসবুকের ব্যবসায় হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কিন্তু শেয়ার করা এই  টিপস গুলো  আপনারা যদি সঠিকভাবে ফলো করে থাকেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন তাহলে ফেসবুকের এই অনলাইন ব্যবসায় সফলতা পাওয়া সম্ভাবনা অনেটাই  বেড়ে যাবে। প্রথমেই এক নজরে দেখে নেই কি কি সেই ৮টি টিপস যেগুলো অনুসরন করে আপনারা আপনাদের ফেসবুকের অনলাইন ব্যবসা জনপ্রিয় এবং সফল করে তুলতে পারবেন। তারপর এগুলো step by step আলোচনা করবো।


Top index...

  • গুগোল স্পেডশিটে(spreadsheet) ব্যবহার
  • ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স(trade licence) করা
  • ডেলিভারি পার্টনার
  • প্রোডাক্ট এর সঠিক ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করা
  • ভালো কমিউনিটি তৈরি করা
  • Upsell
  • ভার্চুয়াল টিম তৈরি করা
  • Economy of scale(অর্থনৈতিক মাপকাঠী)
  • শেষ কথা



 

ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা


গুগোল স্পেডশিটে(spreadsheet) ব্যবহার


আপনার ব্যবসার যতরকম হিসা নিকাশ আছে সবকিছুই স্প্রেডশিটের লিখে রাখবেন। আপনার প্রোডাক্ট যতগুলো জায়গায় বিক্রি করেছেন তাদের ফোন নাম্বার নাম ঠিকানা ডিটেলস সব লিখে রাখবেন। তার কারণ হচ্ছে এগুলো ভবিষ্যতে আপনার অনেক কাজে দিবে। 


আপনার যে ফাইন্যান্সিং হিসাব এবং এই কাস্টোমারের লিস্ট এগুলো আজীবন কাজে লাগবে। আপনার ব্যবসার কোথায় কোন জায়গায় কি করেছেন এগুলো যদি স্পেডশিটে সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখেন তাহলে সারা জীবন কাজে লাগবে। দলিল-দস্তাবেজ খাতা-কলমে গুলোতে না রেখে স্পেডশিটে রাখলে আপনার অনলাইন ব্যবসা জন্য আরও অনেক সহজ হবে।


ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স(trade licence) করা



আপনার ব্যবসা একটা পর্যায় পর্যন্ত গেলে ট্রেড লাইসেন্স করে ফেলেন। যদিও ট্রেড লাইসেন্স করাটা অনেকটা ঝামেলার। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্স হয়ে গেলে নিজের মধ্যে একটা কনফিডেন্স বেড়ে যায় অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে। তখন আপনার মনে হতে পারে হ্যাঁ আমার একটা অফিশিয়াল বিজনেস আছে। এ ফিলিংসটা কিন্তু আপনার কাজ করার গতি অনেকটা বাড়িয়ে দিবে।



ডেলিভারি পার্টনার


অনেক সময় আমরা যখন ফেসবুকে ব্যবসা করি, যে অর্ডার গুলো আছে সেগুলো নিজেরাই ডেলিভারি করি। কিন্তু এই কাজটা তে আপনার একটা অনেক বড় সময় নষ্ট হয়। আপনি নিজে যেহেতু ব্যবসাটা করছেন তখন আপনি কতগুলো কাজ সামলাতে হচ্ছে। 


আপনি প্রোডাক্ট তৈরি করছেন, আপনি  মার্কেটিং করতেছেন আপনি এ অর্ডার নিচ্ছেন আবার আপনিই ডেলিভারি করতেছেন। ফলে কিন্তু আপনার এখানে প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটি ডেলিভারি পাটনা রেখে দেওয়া উচিত।



অনেক ডেলিভারি পার্টনার রয়েছে। একটি ডেলিভারি পার্টনারের সাথে পার্টনাঅপ করে ওনাদের যে লজিস্টিক্যাল ড্যাশবোর্ড আছে সেটার মাধ্যমে কিন্তু খুব সহজেই সুন্দরভাবে গুছিয়ে কাজটা করা যায়। এটা যে যত বেশি আগে করতে পারবেন সে তত ব্যবসাটাকে automate করতে পারবেন।



প্রোডাক্ট এর সঠিক ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করা

 


বর্তমান সময়ে একটা অনলাইন ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ডিজিটাল মারকেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার ব্যবসা নির্ভর করবে আপনার সেলস এর উপর। আর আপনার সেলস নির্ভর করছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর। আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর স্কিলস যত ভাল হবে আপনার পণ্যের সেলও কিন্তু তত বেশি হবে।


ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত ফেসবুকের দিকে বেশি ফোকাস করি।এক্ষেত্রে ফেসবুক পেইজ এবং ফেসবুক গ্রুপ চালানোর দক্ষতা খুবই বেশি থাকা দরকার। ফেসবুকের পোস্টগুলো স্কয়ার (চতুর্ভুজ)থাকা দরকার। ফেসবুকের ভিডিও গুলোর সাইজ স্কয়ার হলে ভালো হয়। এর ফলে ভিডিও বা কোন ছবি পোস্ট করলে বেশি অংশজুড়ে দেখা যায়।


ফেসবুকে কোন পোস্ট করলে তার ক্যাপশন এর লিংক ব্যবহার করলে রিছস অনেক কমে যায়। তাই লিংক টা অবশ্যই ক্যাপশনে  না দিয়ে কমেন্টে  দিতে হবে ।



ভিডিওটা আপলোড করার সাথে সাথেই প্রথম পনেরো থেকে বিশ মিনিটের মধ্যে যত পারেন সেটি শেয়ার করুন বিভিন্ন জায়গায়। কারণ প্রথম পনের বিশ মিনিটের ভিডিওটা যত ভিউ পাবে ফেইসবুক এর অ্যালগরিদম ভাববে ভিডিও টা অনেক বেশি ভালো এর ফলে ভিডিওটা আরো অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাবে।



অনেকেই ভিডিও আপলোড করার  এক দের ঘন্টা পর কমেন্টের রিপ্লাই দিতে শেয়ার করতে আসে এটা করা যাবে না। আপনি যদি ভিডিওটা আপলোড করার সাথে সাথেই সব জায়গায় শেয়ার করেন এবং কমেন্টের রিপ্লাই গুলো দেন তাহলে আপনার ভিডিওটি এনগেজমেন্ট অনেক বেড়ে যাবে ফলে আপনার ভিডিওতে অনেক ভিউ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।এই মার্কেটিং টা কিন্তু অনেক কাজে দিবে আপনার ফেসবুকের অনলাইন ব্যবসার জন্য।

ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার উপায়। সম্পূর্ণ লিগাল উপায়ে!


ভালো কমিউনিটি তৈরি করা


বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু মার্কেটিং করে  ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে আমি বলব আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করেন ফেসবুক গ্রুপ দিয়ে। কারণ পেইজ হল ওয়ান ওয়ে কমিউনিকেশন সিস্টেম। আপনি পোস্ট দিতে থাকবেন আপনার প্রোডাক্ট এর দাম এত, আপনার প্রোডাক্ট এটার জন্য ভালো, ওটার জন্য ভালো ইত্যাদি ইত্যাদি। অন্য কেউ কিন্তু কথা বলতে পারেনা।



ধরুন আপনি একটি টি-শার্টের ব্যবসা করেন। আপনি একটি গ্রুপ খুলেন টি-শার্ট লাভার্স বাংলাদেশ। এখন এই  গ্রুপের সব টি-শার্ট লাভার আছে। যে যেই টিশার্ট পছন্দ করে ছবি দেয় এটাতে সেটা দে। এর ফলে কিন্তু পরস্পরের প্রতি কমিউনিটি টা বেড়ে যায়।


আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে পেজে লাইক/ ফলোয়ার বাড়ানোর যতটা কঠিন, গ্রুপের মেম্বার বাড়ানো কিন্তু ততটা কঠিন না। আর গ্রুপে কিন্তু আপনি একাই শুধু পোস্ট দেন না অনেক মানুষ পোস্ট দেয়।


তাই আপনি ফেসবুক বা অনলাইনে যে ব্যবসায়ী করেন না কেন ওই ব্যবসা রিলেটেড একটি গ্রুপ তৈরি করে ফেলবেন।


Upsell


এই জিনিসটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই বলেছিলাম আপনাদের যে আপনার ব্যবসার যাবতীয় তথ্য, কাস্টমারদের প্রয়োজনিও তথ্য একটি স্প্রেডশিটে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখুন। তার কারণ হলো আপনার যখন কোন নতুন প্রোডাক্ট আসবে তখন সব থেকে বেশি আপনার প্রোডাক্ট কেনার সম্ভাবনা হল সেই মানুষগুলো যে মানুষগুলো অলরেডি আপনার কাছ থেকে কিছু একটা কিনে ফেলেছে।তাই যে মানুষগুলো অলরেডি আপনার কাছে কিছু একটা কিনেছে তাদেরকে upsell করেন।


মনে করুন আপনার কাছে আপনার একটি প্রোডাক্টে 50 জন মানুষ কিনেছে। আপনার আরেকটি নতুন প্রোডাক্ট এসেছে। এখন আপনার ওই 50 জনের লিস্ট কিন্তু আপনার গুগোল স্পেডশিটে আছে। ওই পঞ্চাশ জনকে এখন আপনি একটি এসএমএস বা ই-মেইল এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারেন যে আপনার একটি নতুন প্রোডাক্ট এসেছে আপনার ভালো লাগলে অর্ডার করতে পারেন।


এই যে 50 জন মানুষ এরা কিন্তু আপনার কাছ থেকে ইতিমধ্যেই প্রোডাক্ট নিয়েছে। তারা কিন্তু জানে আপনার কোয়ালিটি কেমন। তারা আপনাকে চিনে,আপনার প্রতি আস্থা রাখে, যেহেতু তারা একবার আপনার কাছ থেকে প্রোডাক্ট নিয়েসে। তাই যখন আপনি ঐ 50 জনকে জানাবেন তখন কিন্তু আপনার প্রোডাক্টটা সেল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তো আপনারা নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যখনই আপনার কোন নতুন প্রোডাক্ট আসবে তখনই সবার আগে আপনার পুরনো কাস্টমার বা যারা আগে আপনার পণ্য নিয়েছে তাদের কাছে মার্কেটিং বা প্রডাক্ট upsell করতে হবে।



ভার্চুয়াল টিম তৈরি করা


এখন যেহেতু সবাই বা ঘরে বসে কাজ করছে। আপনিও চাইলে কিন্তু এরকম একটি টিম গঠন করতে পারেন। প্রডাক্ট ডেলিভারি কাজ একজনকে দিয়ে রাখতে পারেন। সে ভার্চুয়ালি ড্যাশবোর্ড এর সব কিছু ম্যানেজ করবে ডেলিভারি করবে।


আপনার মার্কেটিংয়ের কাজ আছে সেটা আয়োজনকে দিয়ে  দিতে পারেন যে মার্কেটিংয়ে ভালো। মনে করুন সে একজন সাত্র তারও এখন কোন টিউশনি নেই। কিছু একটা যদি কাজ করতে পারে সে ক্ষেত্রে তার ও ভালো হয়। এদিকে আপনারা সময় বাঁচবে। অনেক সময় কমিশন সিস্টেমও করতে পারেন। যে সে যতগুলো সেলস আনবে সেখান থেকে একটা কমিশন থাকে দিয়ে দিবেন। এক্ষেত্রে তারও লাভ আপনারও কোন প্রেসার থাকলো না।


আপনি চাইলেই ভার্চুয়ালি একটি টিম গঠন করতে পারেন। সবার কিন্তু প্রোডাক্ট বানানোর ক্ষমতা নাই কিন্তু মার্কেটিং বা অন্যান্য কাজ গুলো করার স্কিল রয়েছে। তাই আপনার প্রোডাক্ট তৈরি করার ক্ষমতা আছে তার মার্কেটিং করার স্কিল রয়েছে। এভাবে যদি কাজ করেন তাহলে টিমটা অনেক স্ট্রং হয়ে সে তার বাসা থেকে আপনি আপনার বাসা থেকে কাজ করবেন।  যদি থাকে য স্যালারি না দিতে পারেন তার সাথে ডিসকাস করে নিবেন। বিভিন্ন কমিশন হওয়ার করবেন। এক্ষেত্রে কিন্তু আপনাদের দুজনেরই লাভ।




Economy of scale(অর্থনৈতিক মাপকাঠী)



যে কোন একটা প্রোডাক্ট তৈরি করে ঐটা বিক্রি করে আসতে পুরো যে সার্কেলটা পূরণ করতে হয় দশটা প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে কিন্তু প্রায় একই কাজ করতে হয়। ইকোনোমিস্টের মানে হল আপনি যত প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন এই ইকোনমিক স্কেলটা তত বেশি হবে।


মনে করুন আপনি একটা টি শার্ট বিক্রি করে যেটার দাম আড়াইশো টাকা। যখন আপনি একসাথে অনেকগুলো কিনবেন তখন কিন্তু এটার দাম আড়াইশো টাকা থাকে না 200 টাকা হয়ে যায়। এবং 200 টাকা থেকে কিন্তু ওরা প্রফিট পায়। এটা ইকোনমিক্স স্কেল। তাই যে প্রোডাক্টই বানাচ্ছে সেটার সাথে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট বের না করে যে প্রোডাক্ট টা আপনার বেশি বিক্রি হচ্ছে   ওইটার ইকোনোমিক কাউন্সিল টার্গেট করে ওই প্রোডাক্ট বেশি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাহলে দেখবেন আপনার ব্যবসায় লাভ টা অনেক তাড়াতাড়ি আসবে।


শেষ কথা


এই একটাই ছিল আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চেয়েছিলাম। যারা যারা অনলাইনে ব্যবসা করছেন। আপনারা  দুর্দান্ত একটা কাজ করতেছেন। আপনারা উদ্যোক্তা আপনাদের উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশের ইকোনমিক চাকা ঘুরছে। আপনাদেরই ছোট ছোট কাজগুলো দিয়ে অনেকেই কর্মসংস্থান মিলবে। তাই অবশ্যই আপনাদের এই ব্যবসা গুলো চালিয়ে নেওয়া উচিত।


যারা হয়তো বা একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছেন তারা শুরু করবে দেন। খুবই সহজ ফেসবুক আছে। আপনি আপনার প্রোডাক্ট বানান সেটার মার্কেটিং মার্কেটিং করেন ইনশাল্লাহ সেল হয়ে যাবে। ডেলিভারি পাটনা করেন। আস্তে আস্তে প্রতিটা জিনিস যুক্ত করেন নিজের ব্যবসার মধ্যে। একদিনে কিন্তু সবগুলো সম্ভব না। এজন্য আপনাকে ধৈর্য রাখতে হবে। এবং ঘাটাঘাটি করেন অনলাইনে পড়াশোনা করেন এগুলো নিয়ে দেখবেন আপনার ব্যবসা টা খুব দ্রুত অনেক বড় হয়ে গেছে।


আরো পড়ুন...





  

0/Post a Comment/Comments