প্রসেসর কি ? প্রসেসর এর কাজ কি ? কি দেখে কিনবেন।


প্রসেসর কি



প্রসেসর  হচ্ছে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। এটি একটি প্রোগ্রামেবল গাণিতিক ইঞ্জিন। গাড়ি যেমন ইঞ্জিন ছাড়া চলতে পারে না তেমনি একটি কম্পিউটার প্রসেসর ছাড়া চলতে পারে না।



প্রসেসর কি



প্রসেসর এর ভিতরে রয়েছে অসংখ্য ট্রানজিস্টর। তবে এই ট্রান্জেষ্টর গুলো হচ্ছে  নেনো রেঞ্জের। অত্যন্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ট্রানজিস্টর। প্রসেসর এর ওই ছোট জায়গার ভিতর কোটি কোটি ট্রানজেকশন হয়েছে। এবং এই ট্রান্জেষ্টর গুলো প্রতিনিয়ত অন অফ হতে থাকে।


প্রতিনিয়তঃ অন অফ হওয়ার কারণে বাইনারি নানা রকম ক্যালকুলেশন চলতে থাকে প্রসেসর মধ্যে। এবং সেই বায়োনারি ক্যালকুলেশন গুলো ক্যালকুলেট করে অপারেটিং সিস্টেম নানা রকম কাজ করে থাকে। মূলত এভাবেই একটি প্রসেসর যাবতীয় কাজ প্রসেস করে থাকে।


যে কোন একটি ডিভাইসের কোন একটি কাজ যেমন কোন ভিডিও বা অডিও বা আপনি যদি কোন একটি গেম খেলতে চান তাহলে ওই গেম রিলেটেড যাবতীয় ফাইল গুলো প্রেসেস করে থাকে প্রসেসর।


প্রসেসরের মৌলিক উপাদান


  • প্রসেসরের ALU হচ্ছে গাণিতিক লজিক ইউনিট, যা সমস্ত গাণিতিক এবং লজিক অপারেশন চালাতে সাহায্য করে।

  • এফপিইউ (ফ্লোটিং পয়েন্ট ইউনিট) কে "ম্যাথ কোপ্রসেসর "ও বলা হয় যা গাণিতিকভাবে গণনার কাজে সাহায্য করে।

  • রেজিস্টারগুলি সমস্ত নির্দেশাবলী এবং ডেটা সঞ্চয় করে, এবং এটি ALU- এ অপারেন্ডগুলি চালায় এবং সমস্ত ক্রিয়াকলাপের আউটপুট সংরক্ষণ করে।

  • ক্যাশে মেমরি প্রধান মেমরি থেকে ডেটা ভ্রমণে বেশি সময় বাঁচাতে সাহায্য করে।




প্রসেসর এর প্রকারভেদ


এখানে, আমরা বিভিন্ন ধরনের CPU (প্রসেসর) সম্পর্কে আলোচনা করব , যা কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। প্রসেসর সাধারণ ৫ প্রকার



একক কোর প্রসেসর


প্রচলিত ধরনের কম্পিউটারে সিঙ্গেল কোর প্রসেসর ব্যবহার করা হতো । সেই প্রসেসরগুলি একবারে একটি বেশি ব্যাবহার অনেক টাফ ছিল।তাই তাদের মাল্টি টাস্কিং সিস্টেমে আরামদায়ক ছিল না। এই সিপিইউ বা প্রসেসর গুলি কম্পিউটার সিস্টেমের সমগ্র কর্মক্ষমতা হ্রাস করে দিত।


সিঙ্গেল কোর প্রসেসর, ফিফো (First come first serve) মডেলটি ব্যবহার করা হয়, এর মানে হল যে কয়েকটি কাজের সিপিইউতে অগ্রাধিকার ভিত্তি অনুযায়ী প্রক্রিয়াকরণের জন্য যায় এবং উক্ত কাজটি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে।


ডুয়েল কোর প্রসেসর




ডুয়াল কোর প্রসেসর



ডুয়াল কোর প্রসেসরে দুটি প্রসেসর থাকে এবং সেগুলো একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে যেমন সিঙ্গেল আইসি (ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট)। প্রতিটি প্রসেসরের নিজস্ব স্থানীয় ক্যাশে এবং কন্ট্রোলার থাকে, তাই তারা একক কোর সিপিইউ এর চেয়ে দ্রুত বিভিন্ন কঠিন কাজ করতে সক্ষম হয়।




মাল্টি কোর প্রসেসর


মাল্টি কোর প্রসেসরটি বিভিন্ন প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে যার অর্থ একটি চিপে "কোর" এবং প্রসেসরের প্রতিটি কোর তাদের সমস্ত কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার এবং গেম খেলার মতো একই সময়ে একাধিক ক্রিয়াকলাপ করছেনতবে একটি কোর হোয়াটসঅ্যাপ ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করে এবং অন্য কোর গেমের মতো অন্য কাজ পরিচালনা করে।


কোয়াড কোর প্রসেসর


কোয়াড কোর প্রসেসর হল হাই পাওয়ার সিপিইউ, যাতে চারটি ভিন্ন প্রসেসর কোর এক প্রসেসরে একত্রিত হয়। প্রতিটি প্রসেসর অন্যান্য বাম প্রসেসর কোরের সমর্থন না নিয়েই সমস্ত নির্দেশনা নিজের স্তরে সম্পাদন এবং প্রক্রিয়া করতে সক্ষম। 


কোয়াড কোর প্রসেসর ওয়েটিং পুল না পেয়ে এক সময়ে ব্যাপক নির্দেশনা কার্যকর করতে সক্ষম। কোয়াড কোর সিপিইউ কম্পিউটার সিস্টেমের প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, কিন্তু তাদের কর্মক্ষমতা তাদের কম্পিউটিং উপাদান ব্যবহারের উপর নির্ভর করে।


অক্টা কোর প্রসেসর


অক্টা কোর প্রসেসরটি মাল্টিপ্রসেসর আর্কিটেকচার ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে এবং এর ডিজাইন উচ্চতর প্রসেসিং স্পিড তৈরি করে। অক্টা কোর প্রসেসরের মাল্টি টাস্কিং করার এবং আপনার সিপিইউ এর দক্ষতা বাড়ানোর সর্বোত্তম ক্ষমতা রয়েছে। এই ধরণের প্রসেসর বেশিরভাগই আপনার স্মার্ট ফোনে ব্যবহৃত হয়।


জনপ্রিয় কয়েকটি প্রসেসর কোম্পানি


বর্তমানে প্রসেসর কোম্পানি গুলোর মধ্যে জনপ্রিয় প্রসেসর কোম্পানি হচ্ছে দুটি। একটি হচ্ছে Intel  আরেক টা AMD।


AMD (Advanced micro devices) নামে পরিচিত।


এছাড়া অ্যাপেল, আইবিএম এগুলোও প্রসেসর তৈরি করে থাকে তবে সেই প্রসেসরগুলো শুধু তারা তাদের নিজস্ব ডিভাইসের ক্ষেত্রে তৈরি করে থাকে।


প্রসেসর কেনার আগে কোন কোন বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবেন 


  • Clock speed

  • Number of cores

  • Cache memory

  • Generation

  • Fsb


যদি অ্যাডভান্স লেভেলের প্রসেসর কিনতে চান সে ক্ষেত্রে নিচের জিনিস গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে


1.GPU

2.HPYPERTHREDING

3.OVERCLOCKING


Clock speed কি


ক্লক স্পিড  দ্বারা  মূলত প্রসেসর স্পিড কে বুঝায়। একটা প্রসেসর কত দ্রুত কাজ করতে পারবে সেটার পরিমাপের একক হচ্ছে Clock speed। ক্লক স্পিড যত বেশি হবে প্রসেসর তত দ্রুত কাজ করতে পারবে। যদি স্পিড কম থাকে তাহলে প্রসেসর স্লো কাজ করবে।


ক্লক স্পিড দ্বারা বুঝায় একটি প্রসেসর একটি ক্লক এ কতগুলো কাজ একসাথে সাথে সম্পন্ন করতে পারে।


প্রসেসরের ক্লক স্পিড কিভাবে মাপা হয়


সাধারণত প্রসেসরের ক্লক স্পিড  মাপা হয় GHZ দ্বারা। বাজারে আপনি 2GHZ 3GHZ 4GHZ প্রসেসর পাবেন। এক্ষেত্রে যে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা হচ্ছে number of cores.


Cores কে আপনি হাতের সাথে তুলনা করতে পারেন। একজন মানুষ এক হাতে যে পরিমাণে কাজ করতে পারে সে কাজটি যদি দুই হাতে করে তাহলে সে কাজটি দ্বিগুণ বা অর্ধেক সময়ে করতে পারবে।


তারমানে একজন মানুষের যদি চারটি হাত হয় তাহলে তিনি কাজ আরো কম সময়ের মধ্যে করতে পারবে। এটাই হচ্ছে number of cores.



Number of cores হচ্ছে একটি প্রফেসর এর ভিতরে কতগুলো প্রসেসর রয়েছে। বাজারে আপনি বিভিন্ন ধরনের প্রসেসর পাবেন। যেমন:


  • Dual

  • Quab

  • Hexa

  • Octa

  • Deca


ডুয়েল কোর প্রসেসর এর ভেতরে ডিভিডি ইন্টার্নাল প্রসেসর রয়েছে। কুয়ার এর ক্ষেত্রে চারটি ইন্টার্নাল প্রসেসর হয়েছে। এভাবে Hexa এ 6 টি

Octa 8 টি Deca এ 10 টি ইন্টার্নাল প্রসেসর রয়েছে।


পরবর্তীতে যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন সেটি হবে


Cache memory


ক্যাশ মেমোরি হচ্ছে প্রসেসর এর সাথে এটাচ করা একটি মেমোরি। যেটা অত্যাধিক দ্রুতগতিসম্পন্ন। প্রসেসর কে কোন কিছু প্রসেস করার জন্য ইনস্ট্যান্ট ডাটার প্রয়োজন পড়ে এবং সেটা খুব দ্রুত লেনদেন করতে হয়। এখন সে ক্ষেত্রে আমরা অন্যান্য যে মেমোরি ব্যবহার করে থাকি হার্ডডিক্স বা মেমোরি কার্ড বা এসএসডি  এগুলো থেকেও দ্রুত গতির মেমোরি হচ্ছে প্রসেসর এর ক্যাশ মেমোরি।


ক্যাশ মেমোরি যত বেশি হবে প্রসেসর ততবেশি ফাস্ট হবে। আর মেমোরি কম হলে সে ক্ষেত্রে ধীর গতির হবে।


সাধারণত একটি প্রসেসরে 2mb 6mb 4mb 8mb পর্যন্ত ক্যাশ থাকে।


জনপ্রিয় প্রসেসর কোম্পানি




ক্যাশ মেমোরিকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে 


  • L1

  • L2

  • L3


=>L1 হচ্ছে অনেক দ্রুত গতিসম্পন্ন মেমোরি। তবে এটা খুব কম পরিমাণে থাকে।


=>L2 অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিসম্পন্ন। এক্ষেত্রে এর সাইজ একটু বেশি থাকে L1 অপেক্ষায়।


=>L3 অপেক্ষাকৃত স্লো। সেটাতে মেমোরির পরিমাণ থাকে অত্যাধিক।



Generation


প্রসেসর কেনার ক্ষেত্রে এরপর যে জিনিসটা লক্ষনীয় সেটা হচ্ছে Generation। ফার্স্ট জেনারেশন থেকে সেকেন্ড জেনারেশন বেটার হবে। আমার সেকেন্ড জেনারেশন থেকে থার্ড জেনারেশন ভালো হবে। এভাবে যত জেনারেশন বাড়তে থাকবে তত ভালো।


জেনারেশন মূলত হচ্ছে প্রসেসর এর আর্কিটেকচারাল রেক্রুটমেন্ট হয়ে থাকে। জেনারেশন যত বেশি হয় ততো প্রসেসরের গতি বেশি হয়ে থাকে। পাশাপাশি এর ইন্টার্নাল ট্রানজিস্টার গুলো রয়েছে সেগুলো সাইজ এ কম হয়ে আসে।জেনারেশন যত বেশি হয় প্রসেসর কার্যক্ষমতা তত কমে যায়।


FSB


FSB হচ্ছে Front side bus বলতে বুঝায় প্রসেসর এর সাথে অন্যান্য অন্যান্য কম্পিউটার ডিভাইসগুলোর যে যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন সেটাই হচ্ছে FSB. এটা যত বেশি হবে প্রসেসর তত দ্রুত কাজ করতে পারবে। আপনার সিস্টেমও ততো দ্রুত রান হবে।


1/Post a Comment/Comments

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন